ঢাকা, ৫ এপ্রিল:
রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির দখল কার্যক্রম এবং চলমান অস্থিরতার ফলে রোহিঙ্গাদের আগামী বছরের মধ্যে নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে কি না, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না— এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শনিবার (৫ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এই উদ্বেগের কথা জানান।
স্ট্যাটাসে প্রেস সচিব উল্লেখ করেন, “রাখাইনের বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের নেতৃত্ব ও কূটনীতিকরা সাহসিকতা ও দৃঢ়তার সঙ্গে অবস্থান নিয়েছেন, যা আশার আলো দেখাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, বার্মিজ সামরিক জান্তাকে খুশি করতে গিয়ে কিছু কূটনীতিক এবং তথাকথিত মানবতার নেতারা 'FDMN (Forcibly Displaced Myanmar National)' শব্দটি উদ্ভাবন করেন। তিনি এই শব্দ ব্যবহারের কড়া সমালোচনা করে বলেন, "এটি কোনো নিরপেক্ষ কৌশল নয়, বরং এটি রোহিঙ্গা জাতিসত্তার অস্তিত্ব অস্বীকারের প্রচেষ্টা। রোহিঙ্গারা শতাব্দীপ্রাচীন ইতিহাস ও সংস্কৃতির ধারক একটি স্বতন্ত্র জাতি। FDMN শব্দটি তাদের পরিচয় ও অধিকার থেকে বঞ্চিত করার একটি পরিকল্পিত পদক্ষেপ।"
শফিকুল আলম জানান, চীনের কুনমিং এবং থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত বিমসটেক সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিরা মিয়ানমারের সামরিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করেন এবং মিয়ানমারের কর্মকর্তারাও শেষ পর্যন্ত এই পরিচয় স্বীকার করতে বাধ্য হন।
তিনি বলেন, "এখন সবচেয়ে জরুরি হলো কূটনৈতিক চাপ অব্যাহত রাখা, যাতে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, সম্মানের সঙ্গে এবং নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়ে তাদের মাতৃভূমিতে ফিরিয়ে নেয়।"
বিশ্লেষকদের মতে, রাখাইনে আরাকান আর্মির অগ্রযাত্রা এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পথকে আরও কঠিন করে তুলছে। তবে আন্তর্জাতিক সমর্থন ও অব্যাহত কূটনৈতিক তৎপরতা এই সংকট উত্তরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন