বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে চুরি হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারে শ্রীলঙ্কার সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ব্যাংককে অনুষ্ঠিত বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হারিনিয়া আমারাসুরিয়ার সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হন।
অর্থ পুনরুদ্ধারে শ্রীলঙ্কার সহযোগিতা
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চুরি হওয়া বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে শ্রীলঙ্কার সক্রিয় ভূমিকা কামনা করা হয়। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী জানান, অর্থ পাচার রোধ ও চুরি হওয়া সম্পদ ফেরত আনার জন্য তাদের সরকার ইতোমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট সম্প্রতি একটি নতুন আইন পাস করেছে, যা এই প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর ও দ্রুততর করবে। তিনি বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেন যে, এ বিষয়ে তারা সব ধরনের সম্ভাব্য সহযোগিতা প্রদান করতে প্রস্তুত।
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধি
বৈঠকে শুধু অর্থ পুনরুদ্ধার নয়, দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা হয়। উভয় নেতা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর পাশাপাশি ভবিষ্যতে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণের সম্ভাবনা নিয়ে মতবিনিময় করেন। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক বাণিজ্যিক সুযোগগুলোকে কাজে লাগিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার ব্যাপারে তারা একমত হন।
গণআন্দোলন ও রাজনৈতিক সংস্কার
এছাড়াও, বৈঠকে দুই নেতা শ্রীলঙ্কায় জুলাই মাসে হওয়া গণআন্দোলনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক চর্চা জোরদারের জন্য সংস্কারমূলক কার্যক্রম পরিচালনার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীকে জানান যে, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিকল্পনা চলছে, যা ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে পারে।
উপস্থিত কর্মকর্তারা
এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ এবং পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। তারা দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন এবং উভয় দেশের পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষায় একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
এই বৈঠককে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন