গাজা, ২২ এপ্রিল: গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধে নতুন একটি শান্তি পরিকল্পনা দিয়েছে কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীরা। প্রস্তাবিত এই পরিকল্পনায় পাঁচ থেকে সাত বছর পর্যন্ত স্থায়ী যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি, ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তির কথাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে এই প্রস্তাবের বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন প্রস্তাব বাস্তবায়নের সম্ভাবনা অনিশ্চিত, কারণ ইসরায়েল এখনো গাজা থেকে সেনা সরানোর কোনো ইঙ্গিত দেয়নি।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ গত ১৬ এপ্রিল সাফ জানিয়ে দেন, “গাজায় এখন থেকে সবসময় ইসরায়েলি সেনা উপস্থিত থাকবে।” তিনি জানান, গাজার নিরাপত্তা জোনে সেনারা লেবানন ও সিরিয়ার সীমান্ত এলাকার মতো স্থায়ীভাবে অবস্থান করবে এবং এটি পূর্ববর্তী সময়ের চেয়ে একটি বড় পরিবর্তন।
এই প্রেক্ষাপটে, কাতার ও মিসরের প্রস্তাব কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের অনড় অবস্থান এবং মার্কিন সমর্থন এই পরিকল্পনার বাস্তবায়নকে আরও জটিল করে তুলছে।
উল্লেখ্য, গত ১৯ জানুয়ারি হওয়া সাময়িক যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি ভেঙে ইসরায়েল ১৮ মার্চ গাজায় পুনরায় হামলা শুরু করে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজার ২১ লাখ ফিলিস্তিনিকে বাস্তুচ্যুত করে এই উপত্যকাকে বিলাসবহুল পর্যটন এলাকায় রূপান্তরের একটি বিতর্কিত প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায়, পশ্চিম তীরের বসতিগুলোতে বিলাসবহুল আবাসন প্রকল্পের বিজ্ঞাপন দেওয়া শুরু করেছে ইসরায়েলি রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলো।
আন্তর্জাতিক সমর্থন, বিশেষ করে মার্কিন অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা পাওয়ায়, ইসরায়েল যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কৌশলগত সুবিধা পাচ্ছে বলেও মন্তব্য করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এ পরিস্থিতিকে ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করছে ইসরায়েলের বিরোধী দল।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রস্তাবটি মানবিক ভিত্তিতে আশার আলো জাগালেও, বাস্তব রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং নিরাপত্তা জটিলতার কারণে এর বাস্তবায়ন এখনো অনিশ্চিত।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন