ঢাকা, ৫ এপ্রিল — যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ১৮৫টি দেশ ও অঞ্চলের ওপর অতিরিক্ত শুল্কারোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এই ঘোষণায় বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। শুল্ক বৃদ্ধির এই তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশও। দেশটির পণ্যের ওপর শুল্কহার এক লাফে ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশে উন্নীত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এই পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে আজ শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জরুরি বৈঠকে বসেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান এবং প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বৈঠক শুরুর আগে প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, দুপুরে ট্যারিফ বৃদ্ধি নিয়ে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বৈদেশিক বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষ। সেখান থেকে পাওয়া সুপারিশ ও সম্ভাব্য করণীয় নিয়েই সন্ধ্যার এই জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশসহ ১৮৫টি দেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে। ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন রফতানিযোগ্য পণ্যে এখন ৩৭ শতাংশ শুল্ক প্রযোজ্য হবে, যা রফতানিতে বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় সাড়ে আট বিলিয়ন (৮৪০ কোটি) ডলারের পণ্য রফতানি করেছে, যার বেশিরভাগই তৈরি পোশাক।
শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারতের ওপর ২৬ শতাংশ, পাকিস্তানের ২৯, চীনের ৩৪, কম্বোডিয়ার ৪৯, ভিয়েতনামের ৪৬, শ্রীলঙ্কার ৪৪, থাইল্যান্ডের ৩৬, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের ২৫ ও ২৪ শতাংশ করে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্ষেত্রেও ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে পাল্টা জবাব হিসেবে চীন ৩৪ শতাংশ ও কানাডা ২৫ শতাংশ হারে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতি ও রফতানি খাতে এর প্রভাব মোকাবেলায় আসন্ন দিনগুলোতে সরকারের পক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন