ব্রেকিং নিউজ

পারভেজ হ'ত্যা: দুই সংগঠনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, তদন্ত দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

 


ঢাকা, ২০ এপ্রিল:

প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ছাত্ররাজনীতি অঙ্গন। নিহত পারভেজ ছাত্রদলকর্মী ছিলেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সদস্যকে দায়ী করায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি।

রোববার (২০ এপ্রিল) ভোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে ছাত্রদলের অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হয়, "ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরসহ অন্যান্য নেতারা যে অভিযোগ করেছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সংগঠনের বনানী থানার যুগ্ম আহ্বায়ক সোবহান নিয়াজ তুষার এবং যুগ্ম সদস্য সচিব হৃদয় মিয়াজী হত্যার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন।"

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সংগঠন পিইউএসএবি তাদের পোস্টে যে তিনজনের নাম প্রকাশ করেছে, সেখানে অভিযুক্তদের নাম নেই। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজেও অভিযুক্ত দুই নেতার কোনো উপস্থিতি বা সংশ্লিষ্টতা দেখা যায়নি।

পোস্টে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে 'দায় দিয়ে দাও' সংস্কৃতি অনুসরণের অভিযোগ তুলে বলা হয়, “নিহতের মরদেহকে রাজনীতির হাতিয়ার বানানো হচ্ছে। আমরা স্পষ্টভাবে জানাচ্ছি, ছাত্রদলের এমন কার্যক্রম নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য হুমকি।”

সংগঠনটি অভিযোগ করেছে, প্রমাণ ছাড়াই ফেসবুকে ‘মব ট্রায়াল’ চালানো হচ্ছে, যার ফলে অভিযুক্ত দুই নেতার নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া মূল হত্যাকারীরা থেকে যাচ্ছে আড়ালে। তারা দাবি করে, “যদিও নিহত পারভেজ ছাত্রদলের কর্মী ছিলেন, তবে কেন ছাত্রদলেরই শীর্ষ নেতা প্রকৃত হত্যাকারীদের আড়াল করছেন, তা বোধগম্য নয়।”

অন্যদিকে, শনিবার রাতে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির গণমাধ্যমকে জানান, এই হত্যাকাণ্ডে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী শাখার সদস্যরা জড়িত এবং তারা বিচার দাবি করছেন।

প্রসঙ্গত, শনিবার রাতে রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ছুরিকাঘাতে খুন হন জাহিদুল ইসলাম পারভেজ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, পারভেজের সঙ্গে ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রীকে ঘিরে ইংরেজি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরে বিষয়টি মীমাংসা করে দেয় বলে জানালেও, ক্যাম্পাসের বাইরে বের হওয়ার পর ৩০-৪০ জনের একটি দল পারভেজকে ঘিরে ফেলে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। গুরুতর আহত অবস্থায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনাটি নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং গোয়েন্দা সংস্থার হস্তক্ষেপ চেয়েছে। এদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে এবং জড়িতদের শনাক্তে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ চলছে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন

Choose Your Language