ব্রেকিং নিউজ

প্রত্যাবাসনে আশার আলো: মিয়ানমার ফেরত নিচ্ছে ১.৮ লাখ রোহিঙ্গা


কক্সবাজার, ৫ এপ্রিল ২০২৫
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বারবার ব্যর্থতার পর অবশেষে দেখা দিয়েছে আশার আলো। মিয়ানমারের জান্তা সরকার জানিয়েছে, বাংলাদেশে অবস্থানরত তালিকাভুক্ত ৮ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে প্রথম ধাপে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা তাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য উপযুক্ত বলে তারা স্বীকৃতি দিয়েছে। এছাড়াও আরও ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বর্তমানে চূড়ান্ত যাচাই-বাছাইয়ের পর্যায়ে রয়েছে।

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা বিষয়ক প্রতিনিধি খলিলুর রহমানের সঙ্গে বৈঠকে এই ঘোষণা দেন মিয়ানমারের উপপ্রধানমন্ত্রী ইউ থান শিউ। বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক পোস্টে জানানো হয়।

এই খবরে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে উচ্ছ্বাস। অনেক রোহিঙ্গা স্বদেশে ফিরে যাওয়ার আশা নিয়ে আলোচনা করছেন একে অপরের সঙ্গে।

রোহিঙ্গা নেতারা জানিয়েছেন, যদিও মিয়ানমারের সম্মতি একটি বড় কূটনৈতিক অগ্রগতি, তবে তারা চান মিয়ানার সরকার স্পষ্টভাবে জানাক যে রোহিঙ্গাদের কোথায় রাখা হবে—আরাকানের মংডু, বুচিদং না অন্য কোনো স্থানে।

২০১৭ সালে সহিংসতার মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নিয়ে তৎকালীন মানবিক উদ্যোগ এখন বাংলাদেশের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী সংকটে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৩ লাখেরও বেশি।

সম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প সফর করেন এবং প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তারা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতারেও অংশ নেন এবং রোজার ঈদের আগেই প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ সফল হতে পারে বলে আশ্বাস দেন।

এই পটভূমিতে মিয়ানমারের সম্মতি নিঃসন্দেহে একটি বড় সাফল্য বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, "প্রত্যাবাসনে নতুন আশার দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। এটি প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের কূটনৈতিক সফলতা।"

তবে প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা ও পর্যবেক্ষণের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা, যাতে ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গারা নিরাপদ ও সম্মানজনক জীবনযাপন করতে পারেন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন

Choose Your Language