পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’ হামলায় শিশুসহ অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। এ হামলায় আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক ব্যক্তি। বুধবার (৭ মে) রয়টার্স প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা পাকিস্তানের ৯টি স্থানে সফলভাবে আঘাত হেনেছে। ভারতের ভাষ্য অনুযায়ী, এসব অভিযান ‘সন্ত্রাসী ঘাঁটি’ ধ্বংসের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়েছে।
পাকিস্তানও পাল্টা জবাবের দাবি করেছে। দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান এবং একটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এর মধ্যে ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মির অঞ্চলে তিনটি যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়েছে বলে রয়টার্স-কে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসনের চারটি সূত্র।
পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী রয়টার্স-কে বলেন, “ভারতের পাঁচটি আকাশযান—তিনটি রাফাল, একটি এসইউ-৩০, একটি মিগ-২৯ এবং একটি হেরন ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।”
হামলার পর সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রধান ভারতীয় এয়ারলাইনসগুলোর মধ্যে ইন্ডিগো ও এয়ার ইন্ডিয়া তাদের ফ্লাইট অপারেশন সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে।
একইসঙ্গে, পাকিস্তানের সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি (CAA) ৪৮ ঘণ্টার জন্য দেশের পুরো আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে। এই সময়ে সকল অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত থাকবে। ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশাপাশি লাহোর, করাচি, ফয়সালাবাদ, সিয়ালকোট ও কোয়েটা বিমানবন্দরও পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
‘অপারেশন সিন্দুর’ হামলার কয়েক ঘণ্টা পর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এক আন্তর্জাতিক বার্তা দিয়েছেন। এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া পোস্টে তিনি লিখেছেন, “বিশ্বকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা প্রদর্শন করতে হবে।”
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মিরের পেহেলগামে একটি ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন পর্যটক। ঘটনার পর ভারতের পক্ষ থেকে সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করা হয়। পরিস্থিতি শান্ত করতে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করে ইরান ও রাশিয়া, তবে তা উপেক্ষা করে ভারত হামলা চালায় পাকিস্তানে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন