রংপুর-লালমনিরহাট সীমান্তের তিস্তা সড়ক সেতুর টোল প্লাজায় হেলমেটধারী সশস্ত্র ডাকাতদলের হামলায় তিন কর্মচারী আহত হয়েছেন। এসময় ডাকাতরা ১৪ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায় এবং পুলিশের টহল দলের বিরুদ্ধে নির্বিকার থাকার অভিযোগ করেছে টোল প্লাজার ইজারাদার। এই ঘটনায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৭টায় তিস্তা সড়ক সেতুর লালমনিরহাট অংশের টোল প্লাজায় এই ঘটনা ঘটে। টোল প্লাজার ঠিকাদার নাজমূল আলম নাজু জানান, বুধবার বিকেল ৩টায় কয়েকজন মোটরসাইকেল চালক টোল না দিয়েই সেতু পার হওয়ার চেষ্টা করেন। তারা কর্মচারীদের হুমকি দিয়ে যান, এরপর রাত সাড়ে ৭টার দিকে ২০-২৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে সশস্ত্র ডাকাত দল টোল প্লাজায় হামলা চালায়। হামলাকারীরা টোল প্লাজার ভেতরে ঢুকে ক্যাশ বাক্সে থাকা ১৪ লাখ টাকা লুট করে এবং প্লাজার বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর চালায়।
এ সময় সুরুজ মিয়া (৪০), মুসলিম মিয়া (৩৭) এবং জুয়েল ইসলাম (২৮) নামে তিন কর্মচারী আহত হন, তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর।
ঠিকাদার নাজমূল আলম জানান, ঘটনার সময় পুলিশের একটি টিম মাত্র ২০ ফুট দূরে টহলরত ছিল, কিন্তু তারা হামলা প্রতিরোধে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তিনি আরও বলেন, “কর্মচারীরা পুলিশের সাহায্য চাইলেও তারা সাড়া দেয়নি।”
লালমনিরহাট সদর থানায় নাজমূল আলম বাদী হয়ে মামলা করেছেন, যেখানে ১৫ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। নাজমূল আলম বলেন, “এটি কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়, আমি একে ডাকাতি বলছি।” তিনি সুষ্ঠু তদন্ত এবং আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে, টোলপ্লাজার ম্যানেজার দাউদ আলী সরদার পুলিশকে অভিযুক্ত করেছেন, দাবি করে বলেছেন, পুলিশ ঘটনার সময় নীরব ভূমিকা পালন করেছিল। তিনি বলেন, "হামলাকারীদের সঙ্গে পুলিশের সখ্যতা থাকতে পারে, কারণ পুলিশ কেন তাদের বিরুদ্ধে কিছু করেনি?"
টহলদলের এসআই রওশন আলী হামলাকারীদের সঙ্গে পুলিশের সখ্যতার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, "ঘটনার পর হামলাকারীরা দ্রুত চলে যায়, তখন ঘটনাস্থলে আসার আগে লুটপাট হয়ে গেছে।"
লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মোহাম্মদ নুরনবী বলেন, "আমি পুলিশ ফোর্সসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আমরা তদন্ত শুরু করেছি এবং আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছি। ঘটনার সময় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত করার পরই বিস্তারিত বলা যাবে।"
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন