ভারতের স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্যে নিষেধাজ্ঞা: পশ্চিমবঙ্গে শঙ্কা, দিল্লির দাবি ‘জাতীয় স্বার্থ’


ঢাকা/নয়াদিল্লি, ১৯ মে: ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার স্থলবন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসহ কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গে পরিবহন ও কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে দিল্লি বলছে, জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআই-এর বরাতে এনডিটিভি জানায়, রোববার (১৮ মে) রাতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এই নির্দেশনার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। শনিবার জারি করা সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে পোশাক ও খাদ্যপণ্য আমদানির জন্য নির্দিষ্ট বন্দর ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যা কার্যত স্থলবন্দর দিয়ে এসব পণ্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা।

এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারতীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে সীমান্ত বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত পরিবহন খাত ও শ্রমজীবী মানুষের জীবিকায় প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (পিসিএএসডব্লিউএ) সদস্য কার্তিক চক্রবর্তী জানান, “এতদিন প্রতিদিন গড়ে ২০-৩০টি ট্রাকে তৈরি পোশাক আসত, নতুন নিষেধাজ্ঞার ফলে তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। আগে এই সংখ্যা ছিল ৬০-৮০টি ট্রাক।”

তিনি আরও বলেন, “এই পদক্ষেপে সীমান্ত এলাকার চালক, হেলপারসহ লজিস্টিক খাতের বহু মানুষ ক্ষতির মুখে পড়বে।”

এনডিটিভির প্রতিবেদনে একজন বাণিজ্য বিশ্লেষকের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, “বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ভারতের বাজারে তুলনামূলক কম দামে ঢুকে পড়ছে, যা দেশীয় শিল্পের জন্য হুমকি। এটি কিছু ক্ষেত্রে ‘ডাম্পিং’ হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্তের পেছনে কৌশলগত কারণ থাকতে পারে। তাদের মতে, সাম্প্রতিক ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন, যেমন ঢাকা-ইসলামাবাদ ঘনিষ্ঠতা, এ ধরনের পদক্ষেপে প্রভাব ফেলতে পারে। অর্থনৈতিক ক্ষতির ঝুঁকি থাকলেও কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই নিষেধাজ্ঞা দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যিক সম্পর্কে নতুন চাপ সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে যখন বাংলাদেশও সম্প্রতি ভারতের কিছু পণ্যের ওপর অনুরূপ বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।

এ বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন

Choose Your Language