বিমসটেক সম্মেলনে ইউনূস-মোদি বৈঠক ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের অগ্রগতি: সম্ভাবনা কতটুকু?


৬ষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বেশ কয়েকটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম ছিল ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ইউনূসের বৈঠক এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা।


সম্মেলনে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী লড়াইয়ে যৌথ সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষর হয়েছে। একইসঙ্গে ড. ইউনূস থাইল্যান্ডের প্রভাবশালী মহলের কাছে বাংলাদেশের আসিয়ান সদস্যপদ লাভে সমর্থন চেয়েছেন।


একই সময়ে প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমানের সঙ্গে মিয়ানমারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উ থান শিউয়ের বৈঠকে, প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসনের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানানো হয়। এটি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।


বিশ্লেষকরা বলছেন, সম্মেলন থেকে অনেক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হলেও, বাস্তব অগ্রগতির জন্য দরকার কার্যকর বাস্তবায়ন। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, “বিমসটেকের প্রধান কার্যালয় বাংলাদেশে থাকা একটি প্রাপ্তি হলেও সেটি যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে। মেরিটাইম কানেক্টিভিটির মাধ্যমে বিমসটেক দেশগুলোর বাইরের দেশগুলোর সঙ্গেও সংযুক্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে।”


তিনি আরও বলেন, “ভারত ও থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক অঙ্গীকারের অভাব আছে। এ দুই দেশ যদি আন্তরিকভাবে উদ্যোগ নেয়, তাহলে চলমান নেগোসিয়েশন থেকে অন্তত ৩-৪টি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে বিমসটেক কার্যকর হয়ে উঠতে পারে।”


সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর বলেন, “বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখতে দুই দেশকেই কিছু অভ্যন্তরীণ উদ্যোগ নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে এমন একটি বার্তা দেওয়া দরকার যে, কোনো পক্ষের বিপক্ষে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে না।”


সম্মেলনে যেমন ইউনূস-মোদি বৈঠকের মাধ্যমে কূটনৈতিক জল্পনার অবসান ঘটেছে, তেমনি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও দুর্নীতিবিরোধী সমঝোতার মাধ্যমে নতুন সম্ভাবনার দরজাও খুলেছে— এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন

Choose Your Language