ঢাকা, ২০ মে ২০২৫
বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছে নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রীর স্টেট সেক্রেটারি স্টাইন রেনাটে হাহেইমের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের নরওয়েজিয়ান প্রতিনিধিদল। মঙ্গলবার (২০ মে) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নরওয়ের রাষ্ট্রদূত আরাল্ড গুলব্রাডসেন, দূতাবাসের সিনিয়র উপদেষ্টা গানহিল্ড এরিকসেন এবং ক্রিস্টিন লুন্ডেন। আলোচনায় জলবায়ু সংকট মোকাবিলা, নবায়নযোগ্য শক্তি, বন সংরক্ষণ এবং টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে সহযোগিতার বিভিন্ন দিক উঠে আসে।
নরওয়েজিয়ান প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের উচ্চাভিলাষী নবায়নযোগ্য শক্তি নীতির প্রশংসা করে। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বৈঠকে বলেন, "জলবায়ু তহবিলের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে লবণাক্ততা ও বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য সুপেয় পানি ও অভিযোজন প্রকল্পে আমাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।"
তিনি আরও জানান, নদী ও বন রক্ষায় সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। বনাঞ্চল ও ভূমি পুনরুদ্ধারে জলবায়ু তহবিলের অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে প্রাকৃতিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। এ সময় কৃষকদের জন্য ক্ষুদ্র কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রগতির বিষয়টিও তুলে ধরা হয়।
জাহাজ ভাঙা শিল্প প্রসঙ্গে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “এই শিল্পে শ্রমিকদের নিরাপত্তা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ দূষণ এখনও উদ্বেগজনক। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে সংস্কার ছাড়া এই শিল্পকে ‘সবুজ’ বলা যাবে না।” এ বিষয়ে যৌথ গবেষণা ও নীতিগত সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করে নরওয়ের প্রতিনিধিদল।
নরওয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে পরিবেশবান্ধব ও নবায়নযোগ্য শক্তিনির্ভর প্রকল্পে বিনিয়োগের সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়। বিনিময়ে রিজওয়ানা হাসান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও দুর্নীতির হার কমিয়ে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বৈঠক শেষে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের অগ্রাধিকার দুর্বল জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা। পরিবেশ ও মানবাধিকারের প্রশ্নে আমরা আপস করব না।”
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন