প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ ‘থ্রি জিরো’—শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য কার্বন নির্গমন—বিশ্ব গড়ে তুলতে চায়। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ষষ্ঠ বিমসটেক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি উল্লেখ করেন যে বিমসটেক অঞ্চলে বিশ্বের প্রতি পাঁচজনের একজন বসবাস করে। এখানকার নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, সেগুলোকে সুযোগে পরিণত করার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি এমন একটি অঞ্চলের কল্পনা করেন, যেখানে সব দেশ ও জনগণ সমতা, পারস্পরিক সম্মান, অভিন্ন স্বার্থ ও কল্যাণের ভিত্তিতে সংযুক্ত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সুদূরপ্রসারী সংস্কার বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এবং অর্থনীতির প্রতিটি স্তরে শৃঙ্খলা ফেরানোর লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। জ্বালানি নিরাপত্তাকে তিনি বিমসটেক অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন। নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার, আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ বাণিজ্য ও শক্তি দক্ষতা বৃদ্ধিতে যৌথ প্রচেষ্টার আহ্বান জানান।
নির্বাচন প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন সরকারের অন্যতম সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তিনি বলেন, এ সমস্যা সমাধান না হলে পুরো অঞ্চলে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রগুলো মিয়ানমারের সঙ্গে কার্যকর সংলাপ ও উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে এ সংকট সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে। ২০২৫ সালে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠেয় ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে’ বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
ড. ইউনূস আরও বলেন, যুবশক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রযুক্তিকে কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে প্রয়োগ করা, জ্ঞান ও প্রযুক্তির বিনিময় বাড়ানো এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারসহ অন্যান্য অংশীদারদের সম্পৃক্ত করা উচিত।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন