"জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা চলছে": আব্দুস সালাম
স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ তত্ত্ব তুলে ধরে জাতিকে বারবার বিভক্ত করার অভিযোগ তুলেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম। তিনি বলেন, “স্বৈরাচার শেখ হাসিনা একসময় পক্ষ-বিপক্ষের নামে দেশকে বিভক্ত করেছিলেন। এখন আবার সেই বিভাজনের রাজনীতি ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। অথচ এই সংকটময় সময়ে জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।”
শনিবার (১৭ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকার কিশোরগঞ্জ সাংবাদিক ফোরামের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আব্দুস সালাম আরও বলেন, “স্বাধীনতার পর তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী জাতিকে বিভক্ত করেছিল। কিন্তু শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সেই বিভাজন দূর করে সবাইকে একত্রিত করেছিলেন। কে হিন্দু, কে মুসলিম, কে ডান আর কে বাম—এসব দিয়ে জাতিকে আর বিভক্ত করা যাবে না।”
গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের সংকট নিয়ে উদ্বেগ
তিনি বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, “আজ দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল গণতন্ত্রের জন্য, অথচ আজও আমরা তা খুঁজে ফিরছি। ভোটাধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই—এই কি সেই স্বাধীন বাংলাদেশ?”
নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্ন
পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি কেনার সুযোগ না থাকা এবং ভারতের স্বার্থে করিডোর দেওয়ার বিষয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। “আমি পার্বত্য চট্টগ্রামে জমি কিনতে পারি না কেন? এটা তো আমারই দেশ। অথচ ভারতের স্বার্থে করিডোর দেওয়া হচ্ছে। লাখো মানুষ পানির সংকটে ভুগছে, অথচ সরকার এসব নিয়ে ভাবছে না,” বলেন তিনি।
তিনি সতর্ক করে বলেন, “আমরা চাই না বাংলাদেশ গাজায় পরিণত হোক। আবার এটাও চাই না, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।”
ময়মনসিংহ অঞ্চলের উন্নয়নবঞ্চনার প্রসঙ্গ
বক্তব্যের এক পর্যায়ে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের উন্নয়ন বঞ্চনার বিষয়েও কথা বলেন আব্দুস সালাম। “কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ অঞ্চলে যে অবহেলা চলছে, তা দূর করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন ঐক্য, বিভেদ নয়।”
অনুষ্ঠানে অন্যদের বক্তব্য
সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, সাবেক স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নানসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কিশোরগঞ্জ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি রাজেন্দ্র চন্দ্র দেব মন্টু। সঞ্চালনায় ছিলেন সম্মেলন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক হামিদ মোহাম্মদ জসিম এবং ফোরামের সেক্রেটারি এরফানুল হক নাহিদ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন