ঢাকা, ১৪ এপ্রিল – বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বর্ষবরণের শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে আলোচনায় মুখর হন কবি ও দার্শনিক ফরহাদ মজহার। তার বক্তব্যে উঠে আসে শোভাযাত্রার রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত, সাংস্কৃতিক অন্তর্ভুক্তি এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ভাবনার স্পষ্ট রেখাচিত্র।
তিনি বলেন, “মঙ্গল শোভাযাত্রা” নামটি ছিল এক ধরনের রাজনৈতিক চাপিয়ে দেওয়া ধারণা। তার ভাষায়, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ ছিল ফ্যাসিস্টদের দেয়া একটি নাম। যেখানে দেশের আপামর জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নেই, সেখানে কোনো মঙ্গল থাকতে পারে না। এখন যেটা হচ্ছে সেটিই আসল মঙ্গল, কারণ এখানে সবাই অন্তর্ভুক্ত, কেউ বাদ নেই।’
এদিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়ে ফরহাদ মজহার দাবি করেন, এতদিন এই শোভাযাত্রা ছিল একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক বলয়ের অন্তর্গত। কিন্তু এবারের আয়োজন সেই সীমা ভেঙে দিয়েছে, হয়ে উঠেছে সকলের।
তিনি বলেন, ‘একটি বিশেষ গোষ্ঠি আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের টিকিয়ে রেখেছিল। আমরা তাদের রাজনৈতিকভাবে যেমন পরাজিত করেছি, তেমনি সাংস্কৃতিকভাবেও তাদের বিতাড়িত করব।’
বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নিয়েও মতপ্রকাশ করেন তিনি। তার মতে, বাঙালির সংস্কৃতিতে ‘মঙ্গল’ বলতে কিছু নেই। ‘আমাদের সংস্কৃতি বিজু, বিহু, বৈসাবি—এই বৈচিত্র্যেই আমাদের আত্মপরিচয়। আজ সবাই মিলিত হয়েছে, আজকের শোভাযাত্রাই তাই প্রকৃত মঙ্গল।’
ফরহাদ মজহার আরও বলেন, এই নববর্ষ উদযাপন এখন কেবল একটি উৎসব নয়, এটি একটি রাজনৈতিক বার্তা বহন করে। ‘বহির্বিশ্বকে বুঝিয়ে দেয়া, বাংলাদেশ আসলে কী। আমরা দুনিয়া জয় করব।’
তার মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে এই ‘নতুন ধারা’র শোভাযাত্রা বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক ও ভূ-রাজনৈতিক অর্থেও একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় টেনে দিয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন