মিরপুর, ১০ এপ্রিল: ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব বনাম গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের ম্যাচে একটি অদ্ভুত আউট ঘিরে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক—যা এখন রীতিমতো ফিক্সিংয়ের গুঞ্জনে রূপ নিয়েছে।
বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে শেষ উইকেটে জয়ের জন্য মাত্র ৭ রান প্রয়োজন ছিল শাইনপুকুরের। হাতে ছিল ৪১ বল। ঠিক এমন সময়ই ঘটে যায় সেই বিতর্কিত মুহূর্ত—যা এখন পুরো ক্রিকেট মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
ঘটনার সূত্রপাত ৪৪তম ওভারের প্রথম বল থেকে। গুলশানের বোলার নাঈম ইসলাম একটি বল ওয়াইড লাইনের অনেক বাইরে ফেলেন। আম্পায়ার ওয়াইড সংকেত দেন। ব্যাটার মিনহাজুল আবেদিন সাব্বির এগিয়ে এসে বলটি মারতে গিয়ে মিস করেন। এরপর দ্রুত স্টাম্পিং এড়াতে ব্যাট পপিং ক্রিজে ঢুকিয়ে দেন—কিন্তু ঠিক পরেই রহস্যজনকভাবে ব্যাটটি আবার পিছিয়ে নেন, যা দেখে সাধারণ দর্শক থেকে শুরু করে বিশ্লেষক পর্যন্ত সবাই বিস্মিত।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ব্যাট অনায়াসেই ক্রিজের ভেতরে রাখা যেত। কিন্তু সাব্বির যেন ইচ্ছে করেই ব্যাট সরিয়ে নেন। এরপরই স্টাম্পিং হয় এবং তিনি মাঠ ছাড়েন মাত্র ৮ রান করে, ৩৪ বল খেলে।
এই আউটের আগে একটি ছবিও বিতর্কের আগুনে ঘি ঢালে। তাতে দেখা যায়, ওভারের ঠিক আগে শাইনপুকুরের এক খেলোয়াড় পানির বোতল নিয়ে ক্রিজে আসেন এবং স্ট্রাইকে থাকা ব্যাটারের সঙ্গে কথাও বলেন। এমনকি প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের সাথেও তার কথোপকথন হয়।
এতে প্রশ্ন উঠছে—কি বার্তা পৌঁছেছিল সাব্বিরের কাছে ঠিক আগের মুহূর্তে? আর সেটা কি কোনোভাবে তার আউট হওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত?
গুলশান ক্রিকেট ক্লাব আগে ব্যাট করে ৪১ ওভারে ১৭৮ রান করে অলআউট হয়। জয়ের জন্য শাইনপুকুরের প্রয়োজন ছিল ১৭৯ রান, যা তারা করতে পারেনি মাত্র ৫ রানের ব্যবধানে। গুলশানের এই জয় তাদের সুপার সিক্সে যাওয়ার লড়াইয়ে টিকিয়ে রেখেছে।
ক্রিকেট বিশ্লেষক ও ভক্তরা বলছেন, “ম্যাচের শেষ মুহূর্তে এমন আউট, অস্বাভাবিক আচরণ এবং ডাগআউট বার্তার আদান-প্রদান—সব মিলিয়ে এটি স্বচ্ছ খেলার ধারার সঙ্গে যায় না।”
এদিকে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বা লিগ কর্তৃপক্ষ। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে ম্যাচটির একটি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি উঠেছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন